ফ্রিল্যান্সিং না চাকরি কোনটা করা উচিত 2024 এ ?

ফ্রিল্যান্সিং না চাকরি কোনটা করা উচিত? (Freelancing vs Job which one is best in Bangla)

বর্তমান যুগে আমরা সবাই ফ্রিল্যান্সিং শব্দটার সঙ্গে ভীষণ ভাবে পরিচিত।

কিন্তু এখন প্রশ্ন হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং না চাকরি কোনটা করা উচিত ?

এই আর্টিকেল আমি আলোচনা করবো ফ্রিল্যান্সিং না চাকরি কোনটা করা উচিত, কেন করা উচিত, কিভাবে দুটোই আমরা একসাথে করতে পারবো।

ফ্রিল্যান্সিং বলতে বুঝি কোনো এক বা একাধিক বাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কোনো কাজ করা এবং তার বিনিময় অর্থ উপার্জন করা।

তাই ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার জন্য প্রথমেই কোনো বিষয় ভালো করে দক্ষতা অর্জন করতে হবে এবং আস্তে আস্তে সেই বিষয়ের ওপর কাজ যোগাড় করতে হবে।

এখন আসা যাক মূল বিষয়ে

Table of Contents

ফ্রিল্যান্সিং না চাকরি কোনটা করা উচিত (Freelancing vs Job which one is best in Bangla)?

এটা কতগুলো বিষয়ের ওপর নির্ভর করে।

১. আর্থিক নির্ভরশীলতা (Financial Dependency) :

ফ্রিল্যান্সিং না চাকরি কোনটা করা উচিত (Freelancing vs Job which one is best in Bangla)

ধরা যাক আপনি আপনার বাড়িতে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যাক্তি। পুরো সংসার চলে আপনার উপার্জনের ওপর।

সেক্ষেত্রে আপনাকে অবশই চাকরি করা উচিত।

কারণ ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষৎ বড়ই অনিশ্চিত।

হয়তো এখন কাজ আছে , এর পর কাজ নাও থাকতে পারে। তখন আপনি কি করবেন ?

যদি আপনার ওপর অনেক লোক আর্থিক ভাবে নির্ভরশীল হয় তাহলে অবশই চাকরি করা উচিত।

২. ফ্রিল্যান্সিং না চাকরি কোনটা করা উচিত (Freelancing vs Job which one is best in Bangla) – কতটা সময় দিতে পারছেন (How much time you spent) :

আপনি যদি চাকরি করেন, আর পুরো দিনের বেশির ভাগ সময় অফিস যাতায়াত, অফিস এ কাজ করা ইত্যাদিতে ব্যায় করে ফেলেন তাহলে ফ্রিল্যান্সিং করবেন কখন ?

অনেক কে আবার অফিসের কাজ বাড়িতে এনে করতে হয়। এসব ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং কথা না ভাবাই ভালো।

যদি আপনি চাকরি করে , সংসারের সব দায়িত্ব সামলে ২-১ ঘন্টা ফ্রিল্যান্সিং দিতে পারেন তাহলে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করুন।

আরো পড়ুন : কোনো অভিজ্ঞতা ছাড়া ফ্রিল্যান্সিং কি ভাবে শুরু করবো

৩. কাজ শেখা (Learning new skill) :

ফ্রিল্যান্সিং না চাকরি কোনটা করা উচিত (Freelancing vs Job which one is best in Bangla)

চাকরি করার ক্ষেত্রে এটা দেখা যায় যে সারা দিন একই কাজ করে যেতে হয়।

ধরুন আপনি লোগো ডিসাইন করেন। আপনি যেখানে চাকরি করেন সেখানে সারা দিন লোগো ডিসাইন করে হয়।

আপনার আর নতুন কিছু শেখার সুযোগ নেই।

আপনি যদি এতে সন্তুষ্ট হন তাহলে আপনার ফ্রিল্যান্সিং করার দরকার নেই।

কিন্তু যদি আপনি নতুন নতুন জিনিস শিখতে আগ্রহী হন তাহলে আপনি অবশই ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে পারেন।

৪. পরিশ্রম করার মানসিকতা (Mentality to work hard) :

আপনি যদি পরিশ্রমী হন এবং চাকরি বা জব করার পাশাপাশি একটা বিকল্প রোজগার করতে আগ্রহী হন তাহলে অবশই ফ্রিল্যান্সিং করতে পারেন।

কারণ সারাদিন চাকরির জন্য পরিশ্রম করার পর আপনাকে আরো কিছুটা সময় ও পরিশ্রম বাঁচিয়ে রাখতে ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য।

৫. সামনে আসার অসুবিধা (Being exposed) :

যদি আপনি যে কাজটি করছেন সেটি নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করতে চান তাহলে সামনে আসার অসুবিধার সম্মুখীন হতে পারে।

সেটা কি রকম ?

ধরুন আপনি লোগো ডিসাইনার হিসেবে কোনো কোম্পানিতে জব করছেন এবং আপনার কাজ বাইরের ক্লায়েন্ট দের কাছে প্রশংসা লাভ করছে।

এখন আপনি ভাবলেন এবার এটা নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন।

এক্ষেত্রে প্রথম অসুবিধা হলো যে আপনি যদি নিজের নাম এ ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট গুলোতে একাউন্ট তৈরী করেন তাহলে আপনার কোম্পানি যদি জানতে পারে তাহলে তারা আপত্তি করতে পারে।

তখন আপনি কি করবেন ?

তখন আপনি বাড়ির অন্য কারুর নাম বা কোনো ব্র্যান্ডএর নামে ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট গুলোতে একাউন্ট তৈরী করে কাজ শুরু করতে পারবেন। পরে যখন আপনার ফ্রিল্যান্সিং থেকে ভালো টাকা আসতে থাকবে তখন চাকরি ছেড়ে আপনি প্রকাশ্যে আসুন।

৬. পোর্টফোলিও দেখানোর অসুবিধা (Problem of showing sample) :

ফ্রিল্যান্সিং না চাকরি কোনটা করা উচিত (Freelancing vs Job which one is best in Bangla)

যারা চাকরি করছেন তাদের ফ্রিল্যান্সিং আসার আর একটি অসুবিধা হলো পোর্টফোলিও দেখানোর অসুবিধা।

যখন ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট থেকে কোনো অর্ডার পাবেন তখন ক্লায়েন্ট কে পোর্টফোলিও হিসেবে কি দেখবেন ?

কারণ আপনার যা সব পোর্টফোলিও সব তো চাকরি করার সময় আপনি তৈরী করেছেন। ওই পোর্টফোলিও গুলি আইনত ওই কোম্পানির সম্পত্তি।

এক্ষেত্রে উপায় হচ্ছে ওই পোর্টফোলিও গুলো দেখে দেখে ওর মতো দেখতে কিছু নিজের পোর্টফোলিও তৈরী করুন যে গুলো ফ্রিল্যান্সিং সময় আপনি আপনার ক্লায়েন্টদের দেখাতে পারবেন।

৭. ফ্রিল্যান্সিং না চাকরি কোনটা করা উচিত (Freelancing vs Job which one is best in Bangla) – ভবিষ্যত্মুখী (Futuristic) :

চাকরি না ফ্রিল্যান্সিং কোনটা বেশি ভবিষ্যত্মুখী হবে ? মানে কোনটা ভবিষৎএর জন্য ভালো হবে ?

দেখুন আমরা যারা সাধারণ মানের চাকরি করছি, মাসে ২৫০০০-৩০০০০ টাকা আয় করছি, আমরা সত্যি কি এতে সন্তুষ্ট ?

প্রতিদিন জিনিসপত্র দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। যেটায় আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।

বর্তমান যুগে ভারতে ইনফ্লেশন রেট ৮.৫% এবং বাংলাদেশে ৭.৫% যথাক্রমে।

এর এই ২৫০০০-৩০০০০ টাকা মাইনে বেড়ে কত হবে ? সেটা কি কখনো চিন্তা করেছেন ?

আর এই চাকরি আমরা কতদিন করতে পারবো ? মানে আমরা শারীরিক ভাবে কতদিন এই চাকরি করার জন্য উপযুক্ত থাকবো?

তাই আমার মনে হয় যে অল্প বয়স থেকে চাকরির পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং শুরু করা উচিত।

এর পর যখন ফ্রীল্যানসিং থেকে আয় ও যোগাযোগ বাড়বে তখন চাকরি পুরোপুরি ফ্রিল্যান্সিং শুরু করা উচিত এবং আস্তে আস্তে একটা আজেন্সি তৈরী করার চেষ্টা করা উচিত।

ওপরের আর্টিকলে আমি আলোচনা করলাম চাকরি না ফ্রিল্যান্সিং কোনটা করা উচিত (Freelancing vs Job which one is best in Bangla)।

প্রথমে আপনারা চাকরি দিয়ে শুরু করুন , নিজেদের স্কিল, যোগাযোগ গড়ে তুলুন এবং পরে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করুন এবং আজেন্সি তৈরী করার চেষ্টা করুন।

ওপরের আর্টিকেলটি পরে কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট এ জানান।

ফ্রিল্যান্সিং কত বছর বয়স থেকে শুরু করা উচিত (Best age to start Freelancing)?

এর কোনো নির্দিষ্ট বয়স নেই। আপনি ক্লাস ৮ পাস করেও কোনো একটি কাজ ভালো করে শিখে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে পারেন।

মেয়েদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং না চাকরি কোনটা ভালো হবে (Freelancing or Job which one is good for Women/Girl)?

এটা পুরোপুরি নির্ভর করছে মানসিকতা ও পরিস্থিতির ওপর। যদি বিয়ের পর চাকরি করার ব্যাপারে শশুরবাড়ির আপত্তি থাকে তাহলে আপনারা ফ্রিল্যান্সিং করতে পারেন অবসর সময়।

মেয়েরা কি বিষয় ফ্রিল্যান্সিং করলে ভালো (Best subject to start freelancing as a Women/Girl)?

যে কোনো সৃজনশীল কাজে। যেমন কনটেন্ট রাইটিং, গ্রাফিক্স ডিসাইন ইত্যাদি। এ বিষয় আরো জানতে : মেয়েদের ঘরে বসে রোজগার করার উপায় ২০২২

কখন চাকরি ছেড়ে পুরোপুরি ফ্রিল্যান্সিং শুরু করা উচিত (When to leave the job and totally depend on Freelancing)?

আপনি যখন যে বেতন টি পান তার অর্ধেক ফ্রিল্যান্সিং থেকে আয় করতে সক্ষম হবেন তখন ফ্রিল্যান্সিং পুরোপুরি করা উচিত।

ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য কি কি বিষয় দক্ষতা লাগে (What are the essential skill to start a Freelancing career)?

আপনাকে যে কোনো একটি বিষয় খুব দক্ষ হতে হবে। যেমন ধরুন লোগো ডিসাইন , ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদি। এর সাথে আপনাকে ইংলিশ কমিউনিকেশন , ডিজিটাল মার্কেটিং জানতে হবে।

Leave a Comment