আজকে এই আর্টিকেল আমি আলোচনা করবো ইউটিউব শর্টস ও সিপিএ মার্কেটিং একসাথে করে আয় করবেন কি করে ?

বর্তমানে আমরা সবাই ইউটিউব শর্টস এর সঙ্গে অল্প বিস্তর পরিচিত। 

ইউটিউব শর্টস হলো ইউটিউবএ প্রকাশিত ছোট ছোট ভিডিও। 

ইউটিউব ১৪ই সেপ্টেম্বর ২০২০ ইউটিউব শর্টস শুরু করেছে এবং এটি একটি বিটা ভার্সন। বিটা ভার্সন মানে সফটওয়্যার এর একটি নির্দিষ্ট ভার্সন যা টেস্টিং করার জন্য প্রকাশ করা হয় এবং আসল ভার্সন টি আসার আগেই পরীক্ষা মূলক ভাবে এটি চালু হয়।  

ইউটিউব শর্টস করে কিভাবে আয় করবো (How to earn money from Youtube Shorts) ?

ইউটিউব, ইউটিউব শর্টস এর জন্য ১০০ মিলিয়ন ডলারের একটি তহবিল তৈরী করেছে যা শর্টস ক্রিয়েটর দের দেওয়া হবে।  সুতরাং যারা ইউটিউব এর নির্দেশিকা মেনে ঠিকঠাক ভাবে শর্টস বানাবেন তারা মাসে একটি ভালো টাকা আয় করতে পারবেন। 

এ বিষয় মূল আর্টিকেল টি পড়তে পারেন : ক্লিক করুন 

এবার আসুন জেনে নেওয়া যাক –

সিপিএ মার্কেটিং কি (What is CPA Marketing) ?

সিপিএ এর পুরো মানে হলো কস্ট পার অ্যাকশন (Cost Per Action)। মানে কোনো ইউসার যদি কোনো কাজ সম্পূর্ণ করেন তাহলে আপনি একটি টাকা আয় করবেন। 

বিষয় টি বিস্তারিত ভাবে বলছি। 

ধরুন আপনি কোনো একটি সিপিএ সাইট থেকে একটি নিৰ্দিষ্ট অফার নির্বাচন করলেন। এবার আপনার যে অফার লিঙ্ক টি আছে সেটাই কেউ যদি ক্লিক করে কোনো কাজ সম্পূর্ণ করে তাহলে

আপনি একটি টাকা আয় করবেন। 

ইউটিউব শর্টস এর মাধ্যমে সিপিএ মার্কেটিং করার সুবিধা কি (Benefits of using Youtube Shorts in CPA Marketing) ?

প্রথমত আপনি ইউটিউব শর্টস থেকে একটি টাকা আয় করবেন , দ্বিতীয়ত সিপিএ মার্কেটিং থেকেও একটি টাকা আয় করতে পারবেন। 

তাছাড়া আপনারা নিশ্চই জানেন যে বর্তমানে ভিডিও কনটেন্ট এর চাহিদা দিন কে দিন বাড়ছে। 

তাই শুধু টেক্সট ব্লগের ওপর ভরসা না করে ইউটিউব শর্টস বা ইউটিউব লং ভিডিও অবশই বানানো উচিত। 

এবার আসুন জেনে নেওয়া যাক 

ইউটিউব শর্টস এর মাধ্যমে সিপিএ মার্কেটিং করার পদ্ধতি (Methods of doing CPA Marketing by using Youtube Shorts) :

১. একটি নিচ্ বা বিষয় ঠিক করুন (Select a Niche)

ইউটিউব কিন্তু একটি ব্লগিং। তাই একে অনেকে ভ্লগিং (Vlogging) বলে থাকেন। 

সুতরাং ব্লগিং এর মতো এখানেও আপনাকে একটি নির্দিষ্ট বিষয় নির্বাচন করতে হবে আগে। 

যদি আপনি usa বা আমেরিকা কে লক্ষ্য করে বানান তাহলে অবশই ভালো হয়। 

যে বিষয় গুলো আমেরিকা তে বেশি জনপ্রিয় সে গুলোর ওপর কাজ করাই ভালো। 

এব্যাপারে কিছু বিষয় নিচে উল্লেখ করলাম :

১. স্বাস্থ্য এবং সুস্থতা (Health & Fitness)

২. ব্যক্তিগত মূলধন (Personal Finance)

৩. ফ্যাশন (Fashion)

৪. জীবনধারা (Lifestyle)

৫. ব্যবসা এবং বিপণন (Business and Marketing)

৬. প্রযুক্তি এবং গেমিং (Technology and Gaming)

৭. ভ্রমণ (Travel)

ওপরে বর্ণিত নিচ বা বিষয় গুলো ‘ব্রড নিচ’ বা বিশদ বিষয়বস্তু । আপনাদের অবশই এদের মধ্যে থেকে ‘মাইক্রো নিচ’ বা সংক্ষিপ্ত বিষয়বস্তু খুঁজে বার করতে হবে। 

বিশদ বিষয়বস্তু তে রাঙ্ক করা বা প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা খুব শক্ত। কিন্তু সংক্ষিপ্ত বিষয়বস্তু টিকে থাকা বা রাঙ্ক করা খুব সহজ। 

যেমন ধরুন স্বাস্থ্য এবং সুস্থতা (Health & Fitness) বিশদ বিষয়বস্তু তার মধ্যে ওজন কমানো (Weight Loss) হলো সংক্ষিপ্ত বিষয়বস্তু।

আবার ওজন কমানো (Weight Loss) এর মধ্যে কেটো ডায়েট (keto diet) হলো আরো সংক্ষিপ্ত বিষয়বস্তু। 

এর জন্য ভালো করে কীওয়ার্ড রিসার্চ এবং এফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকা জরুরি। 

২. ইউটুবে শর্টস চ্যানেল বানান (Create a Youtube Channel) 

যদি আপনাদের নিচ্ বা বিষয় নির্বাচন করা হয়ে গিয়ে থাকে তাহলে অবশই ইউটুবে চ্যানেল বানান। 

ধরুন আপনার নিচ হলো ওয়েইট লস বা ওজন কমানো। 

যদি আপনি ভালো করে এফিলিয়েট মার্কেটিং নিয়ে গবেষণা করেন তাহলে জানতে পারবেন 

আমেরিকার অধিবাসীরা প্রচুর পরিমানে জাঙ্ক ফুড বা ভাজা ভুজি ধরণের খাবার খেয়ে থাকে বা খেতে পছন্দ করেন । 

তাই তাদের কাছে ওয়েইট লস বা ওজন কমানো একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। 

তাই যখন ইউটুবে শর্টস চ্যানেল বানাবেন চ্যানেল এর নাম ওয়েইট লস শব্দটি অবশই রাখুন। যেমন 

আপনার চ্যানেল এর নাম হতে পারে ওয়েইট লস টিপস , ওয়েইট লস স্টেপস ইত্যাদি। 

সেই অনুযায়ী চ্যানেল এর লোগো, ইউটুবে চ্যানেল কভার ইত্যাদি বানান। 

এক্ষেত্রে আপনারা ক্যানভা (Canva) টুল টি ব্যবহার করতে পারেন। 

এটি হলো সম্পূর্ণ বিনা পয়সায় একটি টুলস যা দিয়ে এই জিনিস গুলো খুব সহজে বানানো যাই।  

৩. একটি সিপিএ অফার নির্বাচন করুন (Select CPA Marketing Offer)

এবার যে কাজ টি আপনাকে করতে হবে সেটি হলো একটি ভালো সিপিএ অফার নির্বাচন করা। 

সিপিএ অফার এর জন্য আপনি এই ওয়েবসাইট গুলো দেখতে পারেন :

১. https://www.clickbank.com/

২. https://www.jvzoo.com/

৩. https://www.digistore24.com/

৪. https://warriorplus.com/

এই ওয়েবসাইট গুলোতে একাউন্ট খুলে আপনার নিচ্ বা বিষয় সম্পর্কিত কিছু অফার সিলেক্ট করুন। 

টিপস: প্রথমেই এমন কোনো অফার নেবেন না যার কমিশন ৫০ ডলার এর বেশি হয়। 

এর পর ওই অফারটির জন্য আবেদন করতে হবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে। 

অফারটির অনুমোদন পেয়ে গেলে সেগুলো ইউটিউব শর্টস এর মাধ্যমে প্রচার করুন। 

৪. শর্টস ভিডিও বানান (Create a Youtube Shorts)

এর পর হলো আসল কাজ। 

আমি ধরে নিচ্ছি আপনি ইউটিউব চ্যানেল বানিয়ে ফেলেছেন এবং অফার ও নির্বাচন করে 

ফেলেছেন। 

ইউটিউব শর্টস ভিডিও আপনি ক্যানভা দিয়েও বানাতে পারেন।  

কতগুলো সাইড যোগ করে একটি সুন্দর শর্ট ভিডিও বানান। মনে রাখবেন ইউটিউব শর্টস ভিডিও টি 

যেন ৬০ সেকেন্ডস এর বেশি না হয়। 

যদি আপনি খরচা করতে রাজি থাকেন তাহলে Fiverr থেকে কারুকে দিয়েও বানাতে পারেন। 

ভিডিও টি বানানো হয়ে গেলে সেটি চ্যানেল এ আপলোড করুন এবং যথাযত ভাবে ডেসক্রিপশন এবং ট্যাগ দিন। আপনার সিপিএ লিংক টি ভিডিও এর ডেসক্রিপশন এ দিন। 

কোনো বিষয় শর্ট ভিডিও দেওয়ার আগে কীওয়ার্ড রিসার্চ করাটা জরুরি। এর জন্য আপনারা Vidiq বা Tubebuddy ব্যবহার করতে পারেন।  

কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ :

১. পারলে প্রতিদিন একটি করে ইউটিউব শর্টস ভিডিও বানান। 

২. প্রথম দিকে সিপিএ লিংক না দিয়ে কিছু টিপস, ট্রিকস এসব গুলো দিন , এটি আপনার চ্যানেল টি ভালো ব্র্যান্ডিং তৈরী করবে। টিপস, ট্রিকস এর জন্য আপনার গুগল বা পিন্টারেস্ট এর সাহায্য নিতে পারেন।  

৩. মহিলা কেন্দ্রিক বিষয় নির্বাচন করতে পারেন এটিতে কনভার্সন ভালো পাবেন। 

৪. ভিডিও টাইটেল, ডেসক্রিপশন এবং ট্যাগ ভালো ভাবে দেবেন।

৫. দেখবেন কোনো ভিডিওতে যেন কপিরাইট ক্লেম বা কপিরাইট স্ট্রাইক না আসে। 

৬. পারলে দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় ভিডিও প্রতিদিন আপলোড করুন। 

৭. যদি আমেরিকা বা পশ্চিমি দুনিয়া কে লক্ষ্য করে ভিডিও বানান তাহলে গুগল এ দেখে নিন কোন সময় টা ভিডিও আপলোড করার জন্য যুক্তিযুক্ত। 

ইচ্ছে করলে এই শর্টস ভিডিও গুলো ফেসবুক একটি পেজ বানিয়ে আপলোড করতে পারেন। 

চাইলে এই শর্ট ভিডিও গুলো পিন্টারেস্ট বা ইনস্টাগ্রাম এ আপলোড করতে পারেন।

পরবর্তী কালে শর্ট ভিডিও গুলোর ওপর ভিত্তি করে বড়ো ভিডিও বানান সেগুলো ইউটুবে এবং ফেইসবুক এ আপলোড করুন। 

পরিশেষে বলবো  ইউটিউব শর্টস এর মাধ্যমে অবশই ভালো রোজগার করা যায়। এর সাথে যদি সিপিএ মার্কেটিং ও করেন তাহলে আপনি দু দিক থেকে যায় করতে পারবেন। 

তবে এই পদ্ধতিতে এক দিনেই অনেক আয় করা যাবে না। 

আপনি যদি ধারাবাহিকতা বজায় রাখেন তাহলে নিশ্চয়ই ভালো টাকা আয় করতে পারবেন। 

লেখাটি কেমন লাগলো অবশই কমেন্ট করে জানাবেন। এ বিষয় কোনো প্রশ্ন থাকলে অবশই করবেন ।