আপওয়ার্ক ফাইভার ছাড়া ক্লায়েন্ট কি করে পাবো। How to get clients outside freelancing sites like Upwork, Fiverr
এখন যারা ফ্রিল্যান্সিং করছেন তাদের কাছে আপওয়ার্ক, ফাইভার, ফ্রীল্যান্সার খুব পরিচিত নাম। তারা সেখানে কাজ করছেন এবং ভালোই টাকা পয়সা রোজগার করছেন।
কিন্তু এই মার্কেট প্লেস গুলো ব্যবহার করার কয়েকটি অসুবিধা আছে।
Table of Contents
আপওয়ার্ক ফাইভার ব্যবহার করার অসুবিধা | What are the disadvantages of Upwork Fiverr?:
১. এ গুলো প্রধানত ক্লায়েন্ট কে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়।
২. যদি কোনো ক্লায়েন্ট কোনো বাজে ফিডব্যাক বা রিভিউ দেন তাহলে আপনার প্রোফাইলেটির সমূহ ক্ষতি হবে।
৩. যদি কোনো কারণে আপনার প্রোফাইল টি ডাউন করে দেয় বা ডিলিট করে দেয় তাহলে আপনার এতদিনের পরিশ্রম নষ্ট।
৪. যদি আপনি কোনো কারণে কোনো ক্লায়েন্ট নামে কমপ্লেইন করেন তাহলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আপওয়ার্ক ফাইভার ওই ক্লায়েন্টের হয়েই কথা বলবে।
৫. অনেক সময় বাজে ফিডব্যাক বা রিভিউয়ের ভয় দেখিয়ে ক্লায়েন্ট রা আপনাকে দিয়ে এক্সট্রা কাজ করিয়ে নেবে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে তাহলে আপনি কি করবেন? আপওয়ার্ক ফাইভার কি ছেড়ে দেবেন ?
আমি এই আর্টিকলে আপনাকে জানাবো কি ভাবে আপনি অন্য সোর্স থেকে ক্লায়েন্ট পাবেন এবং আপওয়ার্ক ফাইভার ওপর নির্ভশীলতা কাটিয়ে উঠবেন।
আপনি যদি সবে মাত্র ফ্রিল্যান্সিং শুরু করে থাকেন তাহলে অবশই পড়ুন : কোনো অভিজ্ঞতা ছাড়া ফ্রিল্যান্সিং কি ভাবে শুরু করবো 2021
আপনি যদি শুধু মাত্র USA বা UK ক্লায়েন্ট চান তাহলে আপনাকে যে যে কাজ গুলো করতে হবে :
১. আপওয়ার্ক ফাইভার ছাড়া ক্লায়েন্ট কি করে পাবো : Yelp থেকে কাজ ধরার চেষ্টা করুন
Yelp একটি বহুল প্রচলিত USA লোকাল বিজনেস লিস্টিং ওয়েবসাইট। এখানে যে কোনো ক্যাটাগরি থেকে আপনি কাজ ধরতে পারেন। কিভাবে ? যে কোনো একটি ক্যাটাগরি সার্চ করুন।
ধরুন আমি সার্চ করলাম রেস্তোরাঁস। এর পর লিস্টিং এ যে যে রেস্তোরা গুলো এলো সেগুলোর প্রোফাইল এর ভেতরে ঢুকে দেখুন যে তাদের ওয়েবসাইট আছে কিনা ? তাদের অনলাইন প্রেসেন্স কেমন ? যদি তাদের ওয়েবসাইট না থাকে বা তাদের ওয়েবসাইট টি অনেক পুরোনো , ওয়েবসাইট টি রেস্পন্সিভ নোই তাহলে তাদের মেইল করুন এবং বলুন যে আপনার ওয়েবসাইট এ এই এই প্রবলেম আছে এবং আপনি যদি চান তাহলে আমি এই গুলো এতো টাকার বিনিময় ঠিক করে দেব।
বা তাদের যদি ফেসবুক পেজ, ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইল না থাকে সে গুলো তৈরী করে দেবেন , সে গুলো ভালো করে অপটিমাইজ করে দেবেন বলে মেইল করতে পারেন।
যদি তারা অনলাইন ক্লায়েন্ট পেতে চান তাদের বলুন আপনি তাদের হয়ে লিড জেনারেশন করে দেবেন তার বিনিময় আপনাকে এতো ডলার চার্জ দিতে হবে।
অবশই আপনার অফিসিয়াল ইমেইল id থেকে ইমেইল করবেন। এজন্য একটি প্রফেশনাল ইমেইল id বানাবেন।
যদি আপনি কোনো হোস্টিং ব্যবহার করে থাকেন তাহলে সেখান থেকে এই ইমেইল id টা তৈরী করুন।
প্রফেশনাল ইমেইল id টা অনেকটা এরকম হবে : info@yourbrandname.com বা contact@@yourbrandname.com বা support@yourbrandname.com বা help@yourbrandname.com.
এছাড়াও আপনি গুগল স্যুট (Google Suit) ব্যবহার করে একটি প্রফেশনাল ইমেইল id বানাতে পারবেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে ১২৫ টাকা মাসে মাসে দিতে হবে।
২. Craigslist থেকে কাজ ধরুন | Get clients from Craiglist:
Craiglist হলো একটি খুবই প্রচলিত মার্কিন ওয়েবসাইট। ওয়েবসাইটে গিয়ে যে কোনো একটা সিটি গিয়ে আপনি যে সব সার্ভিস দেন সেগুলো দিয়ে সার্চ করুন।
আপনি যদি ওয়েবসাইট ডিসাইন করে থাকেন তাহলে ওয়েবসাইট ডিসাইন সার্ভিস বলে সার্চ করুন।
প্রতিদিন যদি ওয়েবসাইট ডিসাইন বা আপনি যে সার্ভিস টি দেন সেটা বলে সার্চ করেন তাহলে আপনি এখন থেকে কাজ পেতে পারেন।
৩. Google থেকে কাজ ধরুন | Get clients from Google :
USA তে যে সব সার্ভিস ভালো চলে সেগুলো সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকলে ভালো। এর জন্য আপনি যদি কীওয়ার্ড রিসার্চ বা বিভিন্ন ব্লগ পড়তে পারেন।
আপনি যাই সার্ভিস দেন না কেন আপনি যদি ভালো SEO জানেন তাহলে আপনি আরো তাড়াতাড়ি কাজ ধরতে পারবেন এবং অনলাইন দুনিয়ায় নিজের ব্র্যান্ডটির ভালো ভাবে প্রচার করতে পারবেন। তাই SEO শেখাটা খুবই জরুরি।
এর পর গুগল থেকে কাজ ধরার জন্য আপনি Google Trends এ যান। সেখানে যে কোনো একটি সার্ভিস USA মধ্যে সার্চ করুন।
ধরুন আমি সার্চ করলাম Dentist.
এর পর দেখলাম Kentucky তে সবচেয়ে বেশি dentist সার্চ হয়। এর পর গুগল গিয়ে সার্চ করুন Dentist in Kentucky. এর পর যাদের ওয়েবসাইট গুলো পেলেন তাদের সাথে যোগাযোগ করুন এবং আপনার সার্ভিস গুলো অফার করুন।
৪. Twitter থেকে কাজ ধরুন | Get clients from Twitter :
আপনি নিশ্চয় Twitter নামটির সাথে পরিচিত। আসুন দেখা যাক সেখান থেকে কি ভাবে কাজ পাওয়া যাবে।
Twitter নিজের ব্র্যান্ড প্রোফাইল বানান আগে.
এর পর Twitter নিজের সার্ভিস টি লিখে সার্চ করুন। সার্চ রেজাল্ট এর মধ্যে থেকে আপনার সার্ভিস রিলেটেড কাজ গুলো খুঁজে বার করুন এবং তাদের সাথে যোগাযোগ করুন।
আপনি তাদের সাথে Twitter থেকে যোগাযোগ করতে পারেন বা তাদের ইমেইল id সংগ্রহ করে আপনার প্রফেশনাল ইমেইল id থেকে ইমেইল করুন।
৫. Linkedin থেকে কাজ ধরুন | Get clients from Linkedin:
বর্তমান যুগে Linkedin প্রফেশনাল দের জন্য একটি খুবই নির্ভরযোগ্য প্লাটফর্ম।
এখানে প্রথমে আপনার নিজের একটি প্রফেশনাল প্রোফাইল বানান।
তার পর আপনার ব্র্যান্ডের নামে একটি প্রোফাইল বানান। ব্র্যান্ড প্রোফাইল টিকে ভালো ভাবে অপটিমাইজড করুন এবং পারলে ডেইলি আপডেট করুন।
এর পর কিছুদিন পর আপনার যখন কানেকশন বা রিচ বাড়বে তখন আপনি USA ক্লায়েন্ট দের কাজের জন্য এপ্রোচ করুন।
Linkedin অ্যাডভান্স সার্চ এ যান। যে কোনো সার্ভিস নিয়ে লোক্যালিটি সিলেক্ট করে সার্চ করুন।
এর পর যারা সার্চ রেজাল্ট এ আসবেন তাদের সাথে কানেক্ট বানান। যখন তারা আপনার কানেকশন একসেপ্ট করবেন তখন তাদের আস্তে আস্তে নিজের সার্ভিস অফার করুন।
৬. Facebook গ্রুপ থেকে কাজ ধরুন | Get clients from Facebook Group:
প্রথমে ফেসবুকে একটি একাউন্ট বানান। তার পর নিজের ব্র্যান্ড এর নামে Facebook Page বানান।
এর পর আস্তে আস্তে নিজের Facebook পেজ টি পপুলার করে তুলুন।
এর পর আপনার সার্ভিস সংশ্লিট Facebook যোগ দিন।
সেখানে যদি কেউ আপনার সার্ভিস সংশ্লিট কোনো রিকুইরেমেন্টস পোস্ট করে থাকেন তাদের এপ্রোচ করুন।
ওই সব গুলো মাঝে মাঝে পোস্ট দিন আপনার সার্ভিস সংক্রান্ত। এতে আপনার পেজটির প্রচার ও হবে এবং আপনার কাজ জোগাড় করতে সুবিধাও হবে।
৭. আপওয়ার্ক ফাইভার ছাড়া ক্লায়েন্ট কি করে পাবো: Quora থেকে কাজ ধরুন
Quora একটি বহুল প্রচারিত প্রশ্ন উত্তর ওয়েবসাইট।
এখানে নিজের একটি প্রফেশনাল প্রোফাইল বানান।
এর পর নিজের সার্ভিস সংশ্লিট প্রশ্নগুলো খুঁজে বার করুন এবং সেগুলোর যথাযত উত্তর দিন। লোকেদের প্রকৃত অর্থে পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করুন।
এর মাধ্যমে Quora নিজের একটি ফলোয়ার বেস গড়ে তুলতে পারবেন।
এর পর কেউ যদি আপনাকে কোনো সার্ভিস এর জন্য এপ্রোচ করেন তাহলে নির্দিষ্ট মূল্যের বিনিময় তাদের সার্ভিস দিন।
ওপরে বর্ণিত সব কোটা উপায় আপওয়ার্ক ফাইভার ছাড়া ক্লায়েন্ট কি করে তার একটি রূপরেখা।
যদি এগুলো আপনি ভালো ভাবে ফলো ফলো করেন তাহলে ধীরে ধীরে আপওয়ার্ক ফাইভার ছাড়া ক্লায়েন্ট বেস তৈরী করতে পারবেন এবং আস্তে আস্তে আপওয়ার্ক ফাইভার ওপর নির্ভরশীলতা কাটিয়ে উঠতে পারবেন।
অবশই পড়ুন : ইউটিউব থেকে কি করে টাকা আয় করবো
তবে ফ্রিল্যান্সিং করার ক্ষেত্রে এই টিপস গুলো মনে রাখবেন | Freelancing Tips:
১. আপনি যাই কাজ করুন না কেন আপনি যদি SEO জানেন তাহলে কাজ পেতে আরো সুবিধা হবে। তাই কাজ ধরার পাশাপাশি SEO টাও ভালো করে শিখুন।
২. কখনো অ্যাডভান্স ছাড়া কাজ শুরু করবেন না। মিনিমাম ২৫% অ্যাডভান্স নিয়ে কাজ শুরু করুন।
৩. সব সময় কাজ নিজের সার্ভার এ তুলে ক্লায়েন্ট কে দেখান। পুরো টাকা দিলে কাজ গুলো ক্লায়েন্ট সার্ভার এ আপলোড করুন এবং ক্লায়েন্টকে সোর্স ফাইল প্রদান করুন।
৪. ক্লায়েন্ট কি সব সময় ভালো ভাবে সম্বোধন করুন। Hello Sir বা Hello Madam বা Hello [Client Name] লিখে সম্বোধন করুন। মনে রাখবেন এরা আপনার ক্লায়েন্ট, এরা আপনাকে টাকা দেয় কাজের জন্য, এরা আপনার বন্ধু নয়।
৫. প্রজেক্ট এর ডেডলাইন অবশই মিট করবেন।
৬. যদি কোনো ক্লায়েন্ট বলে তাদের কাছে অনেক কাজ আছে এবং এই কাজটা কম টাকায় করে দাও তাহলে কখনো তাতে রাজি হবেন না।
দীর্ঘ ১৩ বছর ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এবং ফ্রিল্যান্সিং করার সুবাদে এই কথা গুলো বললাম। এগুলো মাথায় রেখে কাজ করলে আপনারই ভালো হবে।
উপসংহার : আশা করি এই আর্টিকেল টি (আপওয়ার্ক ফাইভার ছাড়া ক্লায়েন্ট কি করে পাবো) পড়ে আপনার এটা পরিষ্কার যে আপওয়ার্ক ফাইভার ছাড়া কাজ পাওয়া যায়। তাই যদি আপওয়ার্ক ফাইভার প্রোফাইল ক্যানসেল হয়ে যায় বা কাজ না পান তাহলে হতাশ হবেন না। অন্যভাবে কাজ ধরার চেষ্টা করুন। নিজের স্কিল বাড়ান প্রতিনিয়ত এবং লোকের সমস্যা খুঁজে বার করে তাদের সাহায্য করুন।
আমার নাম অরিন্দম ঘোষ। আমি এই ওয়েবসাইট এর প্রতিষ্ঠাতা। পেশায় আমি একজন ওয়েবসাইট ডিজাইনার এবং ব্লগিং আমার প্যাশন। আমি এই সাইট এ ব্লগিং, এফিলিয়েট মার্কেটিং, আর্ন মানি অনলাইন বিষয়ক বিভিন্ন পোস্ট করে থাকি। এই সাইট এর মূল লক্ষ্য হলো বাংলাতে কোয়ালিটি কনটেন্ট প্রকাশ করা যা সাইট এর ভিসিটার দের কাজে লাগে।